Thursday, September 11, 2008

হাতি কি বিলুপ্ত হয়ে যাবে?

১০ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখের ইত্তেফাক পত্রিকায় একটি কলামে হাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে কি না সে বিষয়ে প্রখ্যাত নিসর্গবিদ বিপ্রদাশ বড়ুয়া প্রশ্ন রেখেছেন।
প্রবন্ধটি ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনপূর্বক সম্পূর্ণ তুলে ধরলাম।

প্রাণী : হাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে

বিপ্রদাশ বড়ুয়া

হাতি অচিরে, অদূর ভবিষ্যতে লুপ্ত হয়ে যাবে। বুনো হাতি তার আবাস বন ছেড়ে ঘন ঘন লোকালয়ে নেমে আসায় এই অর্থই প্রকাশ করে। এর প্রধান কারণ এদের আবাস বা হ্যাবিট্যাট-এর ক্রমাবনতি। আমাদের দেশে হাতিদের প্রধান বিপদ আসছে তাদের আবাসস্থলের সঙ্কোচন ও অবস্থার ক্রমাবনতির জন্য। চোরাগোপ্তা হাতি শিকারিদের আক্রমণ থাকলেও তার জন্য নয়।

নাগা, কুকি, মিজো ও আরও কিছু আদিবাসীরা হাতির মাংস খুব পছন্দ করে। এজন্য মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও তাদের সংলগ্ন অঞ্চলে হাতি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

ইত্তেফাক পত্রিকার কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অফিস থেকে ২৮ ও ২৯ আগস্ট পর পর দু’দিন কক্সবাজারের নাইক্ষংছড়ি ও চট্টগ্রামের বাঁশখালি, বোয়ালখালি, রাঙ্গুনীয়া, লোহাগড়া প্রভৃতি এলাকায় গত পাঁচ বছরে হাতির উৎপাতের খতিয়ান দিয়েছে। তাদের মতে, এই সময়ের মধ্যে বুনো হাতির আক্রমণে শতাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছে তার চেয়েও বেশি।

প্রাচীনকাল থেকে চট্টগ্রাম ও সন্নিহিত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে হাতি যূথবদ্ধ হয়ে বিচরণ করছে। ত্রিপুরা, আসাম, মিজোরাম, আরাকান-বার্মাসহ এই অঞ্চল বুনো হাতির প্রাকৃতিক আবাস। আরাকান-বার্মার সাদা হাতিও এখানে থাকত। তখন শুধু চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২০০ হাতি ছিল। আবার এরা দেশান্তরীও হত। খেদা দিয়ে এসব হাতি ধরে শিক্ষা দিয়ে পোষ মানানো হত। চট্টগ্রাম জেলা কর্তৃপক্ষ খেদা দেয়ার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করত। প্রতিটি হাতির জন্য তাদের ৭৫০ টাকা সরকারকে দিতে হত। খেদার কাজে ১০০ থেকে ১৫০ লোক নিয়োজিত হত। খেদায় পড়া হাতিদের ২৪ ঘণ্টা খাবার ও পানি দেয়া হত না। তারা তখন শক্ত খুঁটির ঘেরার ফাঁক দিয়ে নাক বের করে একে একে সাহায্য চাইত। সেখানে শিক্ষিত হাতি নিয়ে থাকত মাহুতেরা। আস্তে তারা বুনোদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসত।

১৯৮৫ সালে ভারতে ১৭ থেকে ২১ হাজার হাতি ছিল। সেখানে এখন আছে হয়তো অর্ধেকের কম। বাংলাদেশে ৩০০ হাতি আছে বলে ধরা হয়। আর আকবরের সময় ছিল ৩২ হাজার। জাহাঙ্গীরের সময় এক লাখ ত্রিশ হাজার। আর আমাদের ৩০০ হাতি অচিরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এখন ব্যক্তি মালিকানাধীন ৫০টি হাতি সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে রয়েছে। এরপর হাতি চলে যাবে চিড়িয়াখানায়। পৃথিবীর বহু দেশে যেমন শুধু চিড়িয়াখানাতেই রয়েছে। তারপর থাকবে শুধু বইপত্রে যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট-ময়মনসিংহ অঞ্চলে এক সময় গন্ডার ছিল।

শেরপুর, নেত্রকোনার উত্তরে ভারতের মেঘালয় থেকে হাতি এসে উৎপাত করে। সেখানে তিন হাজারের মতো হাতি আছে বলে মনে করা হয়, আর আমাদের সারাদেশে আছে মাত্র তিনশো। মেঘালয়ে বালফাক্রাম জাতীয় উদ্যান করা হয়েছে দুশো বর্গ কিমি জমি নিয়ে। সেখানে শুকনো মরসুমে এক হাজার পর্যন্ত হাতি জড়ো হয়। বর্ষা নামলেই হাতি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় হাতির প্রজননকাল।

এখন হাতি এসে কক্সবাজার থেকে রাঙ্গুনীয়া পর্যন্ত উৎপাত করছে। নেত্রকোনা শেরপুর অঞ্চলেও করছে। হাতিদের প্রধান দাবি দিনদুনিয়ার মালিক বলে দাবিদার মানুষের কাছে, আমাদের কথা একটু ভাবুন, আমাদের অরণ্য দাও থাকা ও খাওয়ার জন্য। আর আমাদের থাকার জায়গায় যদি আপনারা ঘর ও চাষবাস করেন তাহলে আমাদেরই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে বৈকি! কারণ আমাদেরও বাঁচার অধিকার আছে। এই পৃথিবীর উপর সকল জীবজন্তু, পাখি, গাছপালা, কীটপতঙ্গ, সাপ ও মাছ সবার হক আছে। সে জন্য যদি আমরা পথ ভুলে বোয়ালখালি থানা থেকে কর্ণফুলী পার হয়ে কালুরঘাট চলে এসে আস্তানা খুঁজি? বলা তো যায় না, মাস্টারদা সূর্য সেনের জালালাবাদ পাহাড়ে বসত খুঁজি? বাটালি পাহাড়, টাইগার পাস, দিয়াং পাহাড়ে চলে আসি? ওসব এলাকায় এক সময় আমাদের পূর্ব পুরুষরা ছিলেন। এতই যদি আঁতকে ওঠেন তবে মাথা ঠাণ্ডা করে আমাদের কাপ্তাই, ওয়াগ্গা, সীতা পাহাড় ছেড়ে দিন। আমাদের অবাধে চলার অভয়ারণ্য দিন। আপনারা বাড়তে বাড়তে ১৫ কোটি হয়েছেন, আমরা কমতে কমতে ৩০০ হবো কেন? জ্ঞানী-গুণী বলে পরিচিত আপনারা, আর একটু ভাবুন আমাদের হাতি জাতির কথা। পার্বত্য চট্টগ্রামে লাখ লাখ মানুষ এনে গুঁজে দিচ্ছেন, পাহাড়-অরণ্য শেষ করে দিচ্ছে তারা, কর্ণফুলীতে বাঁধ দিয়ে ঘন ঘাসের বন ডুবিয়ে দিয়েছেন, পাহাড়ী মানুষ ও পাহাড়ী জীবজন্তুর কথা একবার কি ভেবে দেখেছেন? কোনো প্রকল্প নিয়েছেন লুপ্ত হয়ে যাওয়া এখানকার বাঘ, চিতাবাঘ, গন্ডার, সম্বার, নীলগাই, উড়ন্ত কাঠবিড়ালী, হনুমান, ময়ূর, রামকুত্তা, গৌর, চিত্রা-হরিণ, মায়া হরিণ, বাদি হাঁস, বনমোরগের কথা? শুনছি সুন্দরবনে বাঘ নাকি আছে ৩০০ মাত্র।

আমরা হাতিরা যদি না থাকি, অরণ্য যদি না থাকে, হে মানুষ! উৎসবে ও আনন্দে, কল্পনায় ও স্বপ্নে, মধুচন্দ্রিমা এবং অনিবার্য সন্তানদের নিয়ে তখন কার কাছে যাবেন? বলুন! বলো মানুষ, তোমরা আসলে কী চাও?

[লেখক: কথাসাহিত্যিক ও নিসর্গী]

Wednesday, September 10, 2008

আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন

আজ থেকে লন্ডনে আজ হচ্ছে জলবায়ু বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এই সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আরও বেশি সক্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

আজকের যায় যায় দিন পত্রিকায় এ বিষয়ক এক খবরে বলা হয়েছে যে এই সম্মেলনে বাংলাদেশ বিশ্বের ধনী দেশগুলোর কাছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকরী লড়াই চালানোর জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার সাহায্য চাইবে।
বলা হচ্ছে যে আগামী দশকগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যাবে। ফলে বাংলাদেশের এক বিস্তুত অঞ্চল জলের নিচে তলিয়ে যাবে। এর প্রভাবে প্রায় ৭ কোটি মানুষ নিজেদের বসতবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু জীবন গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। এই বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে হলে উপকূলী এলাকায় বাঁধ নির্মাণ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা, আরও ব্যাপক হারে গাছ লাগাতে হবে। এ জন্য ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অন্তত: ৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।

পত্রিকার খবরে প্রকাশ:-

গ্রিনপিসের সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে শুধু ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশেরই ১৩ কোটি মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে বসবাস করছেন। আন্তর্জাতিক সমঝোতার মাধ্যমে গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন প্রয়োজনীয় মাত্রায় হ্রাস করতে ব্যর্থ হলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ বিশ্বের তাপমাত্রা ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয় উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে সুমেরু অঞ্চলে গলতে শুরু করেছে হিমবাহ, যার অবধারিত পরিণতি সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি।
জলবায়ু উদ্বাস্তু বলতে সাধারণভাবে এমন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়ে থাকে যিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কোনো না কোনো কারণে বাস্তচ্যুত হয়েছেন। এ সবের মধ্যে রয়েছে খরা প্রবণতা বৃদ্ধি, বন উজারকরণ, নদীভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, হারিকেন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা টর্নেডো ইত্যাদি। যুদ্ধ বা সংঘাতের কারণে বাস্তচ্যুত মানুষের তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিজনিত কারণে বেশি সংখ্যক মানুষ উদ্বাস্তুতে পরিণত হচ্ছেন, তারা সারা জীবনের জন্য তাদের ভিটেমাটি, চাষের জমি ও জীবনধারণের উপায় হারিয়ে ফেলছেন। এসব কারণে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ ছিন্নমূল পরিবেশ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
জানা গেছে, ৪৭ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে পৃথিবীর উত্তর মেরুতে যে বিশাল বরফরাজ্য রয়েছে তাতে একের পর এক ভাঙন শুরু হয়েছে। মিডিয়ার খবর ও নাসার পাঠানো ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা নড়েচড়ে বসেছেন।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের সামনে এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ। ২০১৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়বে ৫০ শতাংশ। আর ২০২০ সাল নাগাদ সমুদ্রে পানির উচ্চতা এমন পর্যায়ে পৌঁছবে যার ফলে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ এলাকা অধিকহারে বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে।
বাংলাদেশের ওপর সম্পাদিত গবেষণা থেকে জানা গেছে, ২০৩০ ও ২০৫০ সাল নাগাদ বর্তমানের তুলনায় বার্ষিক গড় তাপমাত্রা যথাক্রমে ১ ও ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২১০০ সাল নাগাদ ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ২০৩০ ও ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বর্তমানের তুলনায় যথাক্রমে ১৪ ও ৩২ সেন্টিমিটার এবং ২১০০ সাল নাগাদ ৮৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ শতাংশ এলাকা সমুদ্রের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়বেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬৭ সেন্টিমিটার বাড়লে গোটা সুন্দরবনই পানিতে তলিয়ে যাবে। ইতিমধ্যে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে অবস্থিত ‘লোহাচরা’ ও ‘সুপারিভাঙ্গা’ নামের দুটি দ্বীপ সমুদ্রে হারিয়ে গেছে। লোহাচরা দ্বীপের মাত্র ১ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত প্রায় দেড় লাখ জনসংখ্যার ‘সাগরদ্বীপের’ ৩৩.৬২ বর্গকিলোমিটার এলাকা গত ৩০ বছরে সমুদ্রে তলিয়ে গেছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ ভোলা দ্বীপও গত চার দশকে প্রায় ৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা হারিয়ে বর্তমানে ১৯৬৫ সালের তুলনায় অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে।
পত্রিকার কাছে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জেনারেল সেক্রেটারি ড. আবদুল মতিন বলেছেন, বাংলাদেশের নদীগুলো উজান থেকে নেমে আসা পলিতে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি আবহাওয়ামণ্ডলের তাপ বৃদ্ধির কারণে হিমালয়ের হিমবাহ গলে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের নদীগুলো বর্ষামৌসুমে অতিরিক্ত জলকে ধারণ করতে পারছে না। দু'পাশে উপচে পড়ছে। এর ফলে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

এই অবস্থা মানুষের সামান্য কিছু সচেতনতার মাধ্যমে ঠেকানো যায়। ডা. আবদুল মতিন কয়েকটি প্রস্তাব করেছেন। এগুলো হল
  • কয়লা থেকে কোনো শক্তি উৎপাদন করা যাবে না।
  • সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
  • ব্যাপক বনায়ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
  • অযান্ত্রিক গাড়ি যেমন সাইকেল রিক্সা প্রভৃতির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
  • নদী, জলাশয় ইত্যাদি ভরাট এবং সেগুলোর দূষণ বন্ধ করতে হবে।
বিজ্ঞানী মতিন মনে করেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর পরস্পরের সাথে সহযোগিতা কার্যক্রম বাড়ানোর চেষ্টা করা উচিত। তাহলে উন্নত দেশগুলো যারা বায়ুমণ্ডলে অধিক পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ করে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা সহজ হবে।

পত্রিকার খবরে আরও বলা হয়েছে:_
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষার পর বাংলাদেশের পরিবেশ সচিব এ এইচ এম রেজাউল কবির বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, শীর্ষস্থানীয় দাতা দেশগুলো এবং বাংলাদেশ সরকার মনে করে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়তে এবং বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের জরুরিভিত্তিতে বিপুল অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি ফল হিসেবে বাংলাদেশে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, বন্যা, খরা এবং ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে। গত বছরের প্রবল বন্যা ও ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরে ফসল এবং অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২.৮ বিলিয়ন ডলার। যে কারণে সারা বছরই দেশে লেগেছিল খাদ্য সমস্যা ও পণ্যের উচ্চ মূল্য।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ইউনাইটেড নেশনস ইন্টার-গভর্মেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেইন (আইপিসিসি) আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মোট ভূমির শতকরা ১৭ ভাগ সমুদ্র গ্রাস করে নেবে। এর ফলে অন্তত ২০ মিলিয়ন মানুষ হয়ে পড়বে গৃহহীন।
ইতিমধ্যেই সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের কিছু অংশ জলের তলে তলিয়ে গেছে। এখান থেকে যেসব মানুষ তাদের বসতবাটি ত্যাগ করেছে, আইপিসিসি তাদেরকে বাংলাদেশের প্রথম জলবায়ু শরণার্থী বলে চিহ্নিত করেছে।