Sunday, November 23, 2008

কুয়াশার তীব্রতা

ইদানীং প্রায় প্রতিদিন ভোরবেলায় প্রচুর কুয়াশা পড়ছে। এর কিছু চিত্র আমি এখানে রেখে দিয়েছি। এই সময়ে এত ঘন হয়ে কুয়াশা পড়ার কথা নয়। অন্যান্য বছরগুলোতে অগ্রহায়ণ মাসের এই সূচনা লগ্নে ঠাণ্ডার পরশ লাগে। কুয়াশার হালকা ছোঁয়া লাগে। কিন্তু এমন ঘন হয়ে কুয়াশা পড়তে দেখা যায় না। এবারের প্রাকৃতিক পরিবর্তনের এমন কারণ ব্যাখ্যা করেছেন আবহাওয়াবিদরা। তাদের মতে এবারে হেমন্তকালের সার্বিক তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। অন্যান্য বৎসরগুলোতে এই সময় রোদের তাপ কিছুটা বেশি থাকে। ফলে মাটির উপরিতলের জল শুকিয়ে যায়। কিন্তু এবার তা হতে পারেনি। খাল বিল নদী নালা সহ মাটির উপরিভাগের জল শুকিয়ে না যাওয়ার কারণে একটু শীত পড়ার সাথে সাথেপ্রচুর পরিমাণ কুয়াশার সৃষ্টি হচ্ছে। আর ফলে শীতের তীব্রতাও অনুভূত হচ্ছে। কোন কোন আবহাওয়াবিদ বলেন এবার শীতকালে শীতের পরিমাণও তুলনামূলকভাবে বেশি হবে।

এই সমস্যা তৈরি করেছে মানুষ নিজে। কয়েকদিন আগে CNN এ একটা ভ্রমণকাহিনী দেখছিলাম। কানাডার কোন এক শহর থেকে বরফভাঙ্গা জাহাজে উত্তরমেরু অভিমুখে যাত্রা করেছে কয়েকজন বিজ্ঞানী। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত গত ২০ বৎসরের ছবি থেকে দেখা গেছে উত্তরমেরুর বরফের পরিমাণ ২০০৭ সালে ছিল সবচাইতে কম। এটা কোন সাধারণ বিপদ নয়। এর অর্থ পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। বরফ গলতে শুরু করেছে। বরফ গলার হার এমন থাকলে আগামী ৩০-৪০ বৎসরের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কয়েক মিটার বেড়ে যাবে। নিউইয়র্কের মতো সমুদ্রতীরবর্তি শহরগুলো জলে ডুবে যাবে। বাংলাদেশের মতো (তারা শুধুমাত্র বাংলাদেশের কথা ও এনিমেশন দেখিয়েছে) সমুদ্রতীরবর্তী দেশগুলোর নীচু জায়গাগুলো বিশেষ করে ভাটি অঞ্চলের ব্যাপক অংশ সমুদ্রের জলে তলিয়ে যাবে। একজন বিজ্ঞানী বলছিলেন: প্রকৃতি নিজে থেকে পরিবর্তিত হয় না, মানুষ তাকে পরিবর্তন করে। এর প্রভাব পড়বে আবহাওয়ামণ্ডলে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বজ্রপাতসহ ঝড়বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। বিশেষ করে টর্ণেডোর সংখ্যা বেড়ে যাবে। আবার তার বিপরীত ঘটনার পরিমাণও বাড়বে। কোন কোন জায়গায় শীতের তীব্রতা পূর্ববর্তী বৎসরগুলোর তুলনায় বেশি হবে।

পৃথিবীজুড়ে জীবাস্ম জ্বালানী এখন যে পরিমাণে ব্যবহার করা হচ্ছে তার পরিমাণ কমানো প্রয়োজন। আরো বেশি পরিমাণে গাছ লাগানো দরকার। মানুষের লোভ আজ ক্ষতি করছে মানুষকেই। এই সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু উন্নয়নশীলদেশগুলোতে তার কোন প্রভাব পড়ছে না।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সবজায়গায় এবার কুয়াশা বেশি পড়ছে। এটাও কি আন্তর্জাতিক আবহাওয়াগত পরিবর্তনের কোন প্রভাব? আমরাও কি অবশেষে ক্ষুব্ধ প্রকৃতির রোষের মুখে পড়লাম?

2 comments:

  1. Ato shundor kora likho kivaba, balo haoyachiy, hingsha hoccha dekha.....

    ReplyDelete
  2. ভালো লাগলো এই ওয়েবসাইট টি. আপডেট করবেন. আমাদের একটা ব্লগ আছে. দেখবেন. আপনার মতামত জানাবেন. আপনার মতামত আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান. ধন্যবাদ..........
    http://bairedure.blogspot.com/

    ReplyDelete