Wednesday, April 2, 2008

আরও চিলের বাসা




কুড়িগ্রামের আরও একটি জায়গায় চিলের বাসা খুজে পাওয়া গেল। খলিলগঞ্জ বাজারের পাশে। একটি এনজিও অফিস বিল্ডিং। এই বিল্ডিং এর উপরে মোবাইল কোম্পানীর একটি মাঝারি সাইজের টাওয়ার। এই টাওয়ারের উপরের দুইটি তাকে দুই জোড়া চিল (ভুবন চিল) বাসা দিয়েছে। এমনটা ঘটা একটি বিরল ঘটনা। সাধারণত এমন হয় না। একই টাওয়ারে দুইটা চিলের বাসা দেখার সৌভাগ্য আমার হল এটা ভাবতে ভালো লাগছে।

চিল সাধারণত দুজনে মিলে সংসার পাতে। আশেপাশে কম সময়ই অন্য চিলকে সহ্য করতে পারে। তবে তাই বলে চিলেরা অসামাজিক পাখি নয়। গতকাল সন্ধ্যায় ঘোষপাড়ার যে টাওয়ারটাতে চিলের বাসা আছে সেখানে দু'জন মোবাইল কোম্পানীর কর্মী উঠেছিল। তারা কোনরকম টেকনিক্যাল কাজের জন্য উঠেছিল। চিলদুটো চিৎকারে চারপাশ কাপিয়ে দিচ্ছিল। আমি বুঝতে পারলাম চিলচিৎকার কাকে বলে। ধীরে ধীরে চারপাশ থেকে আরও চিল এসে জড়ো হল। টাওয়ারটিকে কেন্দ্রে রেখে আকাশে চিলেরা ঘুরে ঘুরে উড়তেছিল। মাঝে মাঝে দু'একটা চিল কর্মী দুজনকে ছোঁ মেরে ভয় দেখাচ্ছিল। সন্ধ্যার সময়ের ঘটনা। আমার হাতে ক্যামেরা ছিল না। থাকলেও ভাল উঠত না। চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেছে। তখন আমি চিলগুলোকে গোনার চেষ্টা করলাম। ৩০-৩৮টার মতো হবে। এতগুলো চিল আশেপাশে ছিল আমি ভাবতেও পারিনি। তাদের পরস্পরের বিপদে এগিয়ে আসা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। চিলেরাও যে অন্য চিলের সমস্যা দু:খ ভাগাভাগি করে নিতে চায় তা আমি জানতাম না।

মোবাইল কোম্পানীগুলোর দেশের পাখিসম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসার সময় হয়েছে। তারা দেশের জনগণের সাথে ব্যবসা ভালই করছে। প্রতিদিন তাদের ব্যবসার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হচ্ছে। গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে তাদের নেটওয়ার্ক পৌছে যাচ্ছে। তারা হয়তো আরও প্রত্যন্ত গ্রামে তাদের টাওয়ার বসাবে। সেখানের খেটে খাওয়া মানুষদের সাথে ব্যবসা করবে। বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলে তারা পসরা নিয়ে যাবে কিন্তু সেখানকার প্রকৃতি সংরক্ষণে সামান্যতম ভূমিকা রাখবে না তা হওয়া উচিত নয়। মোবাইল কোম্পানীগুলো প্রকৃতি সংরক্ষণে বিভিন্নরকম অবদান রাখতে পারে। তার মধ্যে তাদের প্রত্যেকটি টাওয়ারে পাখির বাসা তৈরি করাটা হতে পারে দারুণ একটি কাজ। এ উদ্যোগ নিতে পারলে তারা বাংলাদেশের জনগণের প্রশংসাই পাবে। জনগণের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে সময় লাগবেনা।

No comments:

Post a Comment