প্রথম আলো পত্রিকার ৭ মার্চ সংখ্যায় একটি নতুন পাখির খবর পড়লাম। লিখেছেন ইনাম আল হক। সাধারণত আমরা মনে করি পৃথিবীর সব পাখি মানুষ দেখে ফেলেছে। আর নতুন কোন পাখি আবিষ্কারের জন্য অপেক্ষা করে নেই। কিন্তু সকলের ভাবনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার সোলাবেশি প্রদেশের তোগিয়ান দ্বীপপুঞ্জে এই পাখি আবিষ্কৃত হয়েছে। তোগিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মাত্র তিনটি ছোট দ্বীপে একে দেখা গেছে।
সাইজ মৌটুসির মতো ছোট্ট একটুকুন। রঙ সবুজ। এই প্রজাতির অন্যান্য পাখিরাও দেখতে প্রায় একই রকম। তবে এর চোখের চারপাশে সাদা চামড়ার এটি সুক্ষ্ম বলয় আছে। শৈশব কৈশোরে এই বলয় স্পষ্ট হয় না। সাবালক হলে এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরা সংখ্যায় খুব অল্প, স্বভাবেও লাজুক। আবিষ্কৃত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একে বিপন্ন পাখির তালিকায় ঠাঁই নিতে হয়েছে। কারণ তোগিয়ান দ্বীপপুঞ্জ কোন কারণে ধ্বংস হলে এদের নিজস্ব বাসস্থান বিনষ্ট হয়ে যাবে।
এর ইংরেজি নাম Togian white-eye আর বৈজ্ঞানিক নাম জোস্টেরোপস সোমাডিকার্টাই (Zosterops somadikartai)। ধারণা করা হত পৃথিবীতে মোট ৯৪ প্রজাতির ধলাচোখ পাখি ছিল। এখন এই সংখ্যাটি দাড়াল ৯৫। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, এশিয়ার ভারত সহ দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল ও পেরুতে একে দেখা যায়। বাংলাদেশেও এই পাখিটির একটি প্রজাতি আছে। নাম উদয়ী ধলাচোখ। পশ্চিমবঙ্গে এর নাম বাবুন, বাবুনা অথবা বাবুনাই।
এরা চড়ুইয়ের চেয়ে ছোট, হালকা হলুদে সবুজে মেশানো কচি পাতার মত গায়ের রং। চোখের চারপাশে চওড়া সাদা চশমা দেখে সহজেই শনাক্ত করা যায়। উদয়ী ধলাচোখ পাখির ইংরেজি নাম অরিয়েন্টাল হোয়াইট আই (Oriental white-eye), আর বৈজ্ঞানিক নাম জোস্টেরোপস পালপেব্রোসাস (Zosterops palpebrosus)
এই বসন্তে তারা বাসা বানায়। বিভিন্ন খড়কুটো, মাকড়সার জাল তাদের বাসা বানাবার প্রধান উপকরণ। বৈশাখের শেষে বাচ্চা ফুটে বের হবে। তখন গ্রীষ্মমন্ডলীয় বিভিন্ন কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় খেয়ে তাদের বাচ্চাদের নতুন জীবন শুরু হবে।
পৃথিবীর পাখির তালিকায় নতুন পাখি সংযোজন হওয়ার খবরটি জানার সাথে সাথে আমরাও আমাদের দেশের পাখি সম্পর্কে সচেতন হব বলে আশা রাখি।
No comments:
Post a Comment