সুন্দরবনের বৃক্ষরাজি
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। সুন্দরবনকে বাংলাদেশের ফুসফুস বলা হয়। সম্প্রতি প্রলংকরী ঘূর্ণিঝড় 'সিডর'কে বুকে পেতে নিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষা করেছে। মানুষের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টায় সুন্দরবনের অক্লান্ত প্রচেষ্টা রয়েছে। কিন্তু মানুষ তার প্রতিদান দিচ্ছেনা। মানুষের বিভিন্ন বনধ্বংসী কর্মকাণ্ডের ফলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব আজ বিপন্নপ্রায়। অথচ জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ও সম্পদে পরিপূর্ণ এই সুন্দরবনকে আমরা আরো সমৃদ্ধশালী বানাতে পারতাম। সুন্দরবন সম্পর্কে কিছু তথ্য নিম্নরূপ:
- গাছ রয়েছে ৩৩৪ প্রজাতির
- শৈবাল রয়েছে ১৬৫ প্রজাতির
- অর্কিড রয়েছে ১৩ প্রজাতির
এ মধ্যে সুন্দরী গাছ আছে ৭৩% এবং গেওয়া গাছ আছে ১৬ %, বাকীগুলো মিলে বাকী ১১%।
সুন্দরবনের বনজ সম্পদের অন্যতম হল গোলপাতা। নাম গোলপাতা হলেও পাতাগুলো গোল নয়। লম্বা লম্বা ঠিক নারকেল পাতার মতো। সুন্দরবনে বিভিন্নরকম ফার্ণ জন্মে। আরালি, বাইল, কেওড়া, ওড়া, ধুন্দুল, খলসি, গরান, গেওয়া, তনুশা, পশুর, টাইগারফার্ণ প্রভৃতি। এই টাইগারফার্ণ লবণাক্ত এলাকায় জন্মে। এর ঝোপে বাঘ লুকিয়ে থাকে, বিশ্রাম নেয়, তাই এর নাম টাইগার ফার্ণ।
সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি উদ্ভিদের গাছ রয়েছে। এই সব ঔষধি গাছ বিক্রি করে সরকার প্রত্যেক বৎসর প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। যেমন: কাকড়, সিংড়া, আমুর ধানসি, পানিয়াল, গাব, কালিলতা, জাম, বনলিচু, কেওয়াকাটা, নোনা ঝাউ, বামন হাট্টি, মাকাল ইত্যাদি। এছাড়াও ভোল, গিলালতা, বড়সালকান, কিরপা, গরান, হারগোজা, বুম্বা, ভাতকাঠি, স্বেতপলি, হেতলি, গোলপাতা, হোগল, কেওড়া, বাটুল, গেওয়া, তুলসিপাতা, বাসোকপাতা, উলটকম্বল, লজ্জাবতী, লোটকুড়াল, তিতবেগুন, শিয়ালকাটা ইত্যাদি মূল্যবান উদ্ভিদ সুন্দরবনের অন্যতম বনজ সম্পদ।
No comments:
Post a Comment