সম্প্রতি চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কোরীয় রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় একটি সাদা সরাল দেখা গেছে। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে খুব হৈচৈ পড়ে যায়। সবাই অবাক হয়ে যায় এমন একটি ধবধবে সাদা সরাল দেখে। কেউ কেউ ভাবছিলেন এটা বোধহয় পাখিদের কোন নতুন প্রজাতি। কিন্তু বিশিষ্ট পাখিবিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক পাখিটির দৈহিক গঠন, শারীরিক বর্ণনা ও ভিডিওচিত্র দেখে এটাকে অ্যালবিনো বা শ্বেত সরাল বলে চিহ্নিত করেন। মানুষের মধ্যেও অ্যালবিনো দেখা যায়। পাখি বা প্রাণীজগতের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যেও এরকমটা দুর্লভ নয়। কোন কারণে মিউটেশন ঘটলে এমনটা হতে পারে। পাখির মধ্যে প্রতি ২০ লাখের মধ্যে একটির গায়ের রং এমন হতে পারে। উপরের ছবির সেই সাদা পাখিটি একটি অ্যালবিনো সরাল।
আমাদের নিজস্ব দেশীয় জলচর পাখি সরাল। এরা এক রকমের হাঁসজাতীয় পাখি। এর ইংরেজি নাম Lesser Whistling Duck। বৈজ্ঞানিক নাম: Dendrocygna Javanica।
এই পাখিটি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে জলজ উদ্ভিদে ভরা জলাশয়ে ঘুরে বেড়ায়। শীতকালে এরা খাবার ও আশ্রয়ের সন্ধানে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। খাবারের সন্ধানে এরা সন্ধ্যায় বেড়িয়ে পড়ে এবং ভোরের আগেই নিজডেরায় ফিরে আসে। জলজ উদ্ভিদ, বিভিন্ন ফল, শামুক, ছোট মাছ, ব্যাঙাচি ইত্যাদি এদের প্রিয় খাবার। বর্ষায় এদেরকে ধানক্ষেতের মাঝেও দেখা যায়। উড়ে যাওয়ার সময় এটা শিস দিয়ে ডাকে। ডাক শুনেও বোঝা যায় যে সরাল উড়ে যাচ্ছে।
এর গায়ের রঙ বাদামী। লেজের উপরের রঙ লালচে, মাথার উপরে গাঢ় বাদামী রঙের দাগ আছে। পা ও ঠোঁট কালো রঙের। বর্ষাকাল সরালের বাসা বাঁধার সময়। জলজ গাছপালা জড়ো করে জলাশয়ের তীরের কোন ঝোপে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৭ থেকে ১২টি। ডিমের রং সাদা, কিন্তু পরে বাদামী রঙে পরিবর্তিত হয়।
পৃথিবীর অন্য কোন দেশে সাদা রঙের সরাল দেখা পাওয়ার কোন তথ্য নেই। আর বাংলাদেশে এটাকে দ্বিতীয়বার দেখা গেল। ১৯৯৫ সালে ঢাকা চিড়িয়াখানার হ্রদে শ্বেত সরালকে দেখা গিয়েছিল।
Saturday, March 1, 2008
সাদা সরাল
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment